জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করতে চাই: আলী রীয়াজ

জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করতে চাই: আলী রীয়াজ

জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করতে চান বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ। তিনি বলেন, আপনারাও এটা নিঃসন্দেহে চান বলে আমাদের পক্ষে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমরা অনেক বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছি। কিছু কিছু বিষয় আছে আলোচনার মধ্য দিয়ে নিষ্পত্তি করতে হবে। 

আজ রোববার (২০ জুলাই) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফায় পঞ্চদশ দিনের আলোচনার শুরুতে তিনি এমনটা বলেন। 

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ও প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার মতো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ইস্যুতে আলোচনা চালিয়ে নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার সংলাপে বসেছে কমিশন। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে এ আলোচনা শুরু হয়।

আলী রীয়াজ বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে একটি সনদের জায়গায় যাওয়া। যেটা আপনাদের ইচ্ছা, আমাদের ইচ্ছা, সকলের প্রচেষ্টা। দেশের সবাই সেটা প্রত্যাশা করছেন।' 

উচ্চকক্ষ গঠনের সিদ্ধান্ত দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, 'কমিশন বিষয়টি পর্যালোচনা করছে। আশা করেছিলাম, শুক্র ও শনিবার একটা আলোচনার মধ্য দিয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তটা জানাতে পারব। কমিশন আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ বিষয়ে আরেকটু সময় নিয়ে বিবেচনা করা দরকার। আপনাদের বিভিন্ন অবস্থান পর্যালোচনা করছি।' 

তিনি বলেন, 'আপনাদের আলোচনা পর্যালোচনার পাশাপাশি উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কী কী ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে, অন্যান্য বিষয় সংশ্লিষ্ট সেগুলো বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারব। আশা করছি, দু-তিন দিন পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারব।' 

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে তিনি বলেন, 'বেশ কয়েক দিন ধরে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনের পক্ষ থেকে একাধিক প্রস্তাব বিবেচনার জন্য দেওয়া হয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বিএনপি, এনসিপি এবং জামায়াতের কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েছি। সেটি নিয়ে বিভিন্নভাবে পর্যালোচনার পর দলগুলো ও গত কয়েক দিনের আলোচনার সারাংশের ভিত্তিতে সমন্বিত প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করছি, আজকে আলোচনার মাধ্যমে পরিণতির দিকে যেতে পারব।' 

তিনি আরও বলেন, 'গত ১৪ বছরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আমরা সবাই যুক্ত ছিলাম। সে জায়গায় আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে একমত হয়েছি। এখন প্রধান উপদেষ্টার কাঠামো নিয়ে একমতের জায়গায় আসতে পারব। কমিশন শুধু আশা করে না, বিশ্বাস করে।'

কমিশন সূত্রে জানা যায়, আজকের সংলাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ও প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার মতো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ইস্যুতে আলোচনার জন্য তালিকাভুক্ত রয়েছে।

সংলাপে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল। প্রতিটি দলই প্রস্তাবিত সংস্কারের ওপর তাদের নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরছে।

দ্বিতীয় দফা সংলাপে প্রায় ২০টি প্রধান সাংবিধানিক বিষয়ের আলোচনা শেষে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে একটি ঐক্যবদ্ধ সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে কাজ করছে কমিশন।

গত ২ জুন দ্বিতীয় দফা সংলাপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস।

২০২৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক ইউনুসের নেতৃত্বে গঠিত এ কমিশনের দায়িত্ব ছিল রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ইস্যুতে একটি একক জাতীয় অবস্থান গড়ে তোলা।

এর আগে, ২০ মার্চ শুরু হওয়া প্রথম দফা সংলাপে ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা করে ১৯ মে তা শেষ করে কমিশন।

News Courtesy:

TBS | July 20, 2025

 

 

 

 

An unhandled error has occurred. Reload 🗙