বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কী বার্তা দিচ্ছে?

বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কী বার্তা দিচ্ছে?

বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে দেশটিতে।

গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করা ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কারণ দেখিয়ে সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

তবে নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় সাবেক এ শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা দাবি করেছেন, শাস্তি পাওয়ার মতো কোন অপরাধ তিনি করেননি।

সেনাপ্রধানের পদ থেকে ২০২১ সালের ২৪শে জুন অবসরে যান জেনারেল আজিজ। তিনি দায়িত্বে থাকাকালেই তার বিরুদ্ধে বেশকিছু অভিযোগ ওঠে।

কাতার ভিত্তিক একটি সংবাদ মাধ্যম তার এবং পরিবারের সদস্যদের অতীত এবং বর্তমান বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এবং নানা ধরনের দুর্নীতির বিষয় নিয়ে একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রচার করে।

যেখানে বাংলাদেশের ক্ষমতা কাঠামোর সাথে তাদের নিবিড় সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।

তখন সরকার এবং সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে অভিযোগগুলোকে "মিথ্যা ও বানোয়াট" বলে দাবি করা হয়েছিল।

তবে, জেনারেল আজিজ এবং একাধিক বিশ্লেষক যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে আল জাজিরার প্রামাণ্যচিত্রের "ধারবাহিকতা" বা "ফলাফল" বলে মনে করেন।

কিন্তু, এতোদিন পরে এসে, যখন মি. আজিজের অবসরের বয়সও তিন বছর হতে চললো এবং যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে সাম্প্রতিক নির্বাচন ও গণতন্ত্র ইস্যুতে সম্পর্কের ওঠা-নামাই আলোচনায় মুখ্য হয়ে উঠেছিল, তখন নতুন ঘোষণাটির তাৎপর্য কী?

জেনারেল(অব.) আজিজ আহমেদ
ছবির ক্যাপশান,২০২১ সালে একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রচার করে কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা

'এখন যারা করছেন, তাদেরকেও পে করতে হবে'

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্ট ৭০৩১(সি) প্রয়োগ করা হয়েছে বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের ক্ষেত্রে।

দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনে সম্পৃক্ত বিদেশি নাগরিকদের বেলায় এটি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।

বিশ্বাসযোগ্য তথ্য থাকলেই কেবল অ্যাক্ট ব্যবহার করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর অধ্যাপক আলী রীয়াজ বিবিসি বাংলাকে বলেন, "সাড়ে তিন বছর পর যখন এই সমস্ত তথ্যকে ভিত্তি করে যুক্তরাষ্ট্র ব্যবস্থা নিচ্ছে, দেখা যাচ্ছে এগুলো আসলে সত্যিই ছিল।"

"আগে যারা নাকচ করেছিলেন তারা এখন কী বলবেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়," যোগ করেন অধ্যাপক রীয়াজ।

যারা এখন দুর্নীতিতে যুক্ত আছেন তাদের জন্য একে একটা বার্তা বলে মনে করেন এই অধ্যাপক।

"পরিস্থিতিটা এই রকম যে, যে কোনো সময় তারা বিপদগ্রস্ত হতে পারেন। যেভাবে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন, একসময় তাদেরকে তার জন্য পে (মূল্য দিতে হবে) করতে হবে।"

বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবীর বিবিসি বাংলাকে বলেন, ''অন্য কারো যদি কোনো সাবস্টেনটিভ ম্যাটেরিয়াল (উপযুক্ত প্রমাণ) থাকে তাহলে এই ধরনের একটা কনসিকোয়েন্স ফেইস (পরিণতির মুখোমুখি) করার আশঙ্কা তৈরি হলো।"

News Courtesy:

BBC Bangla | May 21, 2024

An unhandled error has occurred. Reload 🗙